সোমবার সকাল। দিনের ব্যস্ত সময়ে ঘড়ির কাঁটায় তখন ১০টা বেজে ৫৫ মিনিট। আচমকাই কলকাতা বিমানবন্দরে এয়ার ইন্ডিয়ার সিকিউরিটি চেকিংয়ের ই-পোর্টালের ফোনটি বেজে ওঠে। অপরপ্রান্ত থেকে জানানো হয়, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই মাঝআকাশ থেকে একটি বিমান হাইজ্যাক করা হবে। এপ্রান্ত থেকে কিছু বলার আগেই কেটে যায় ফোন।
ঠিক দুমিনিটের মাথায় ফের ফোন বেজে ওঠে। জানানো হয়, বিমানবন্দরে বিমানে হাইড্রোজেন বোমা রাখা রয়েছে। যেকোনও সময় ঘটবে বিস্ফোরণ। এই ফোন ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই প্রবল আতঙ্ক ছড়ায়। কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে খবর পৌঁছতেই তড়িঘড়ি ব্যবস্থা শুরু হয় বৈঠক। বিমানবন্দরে জারি করা হয় হাই এলার্ট।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স এবং পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক শুরু হয়। দীর্ঘ সময় প্রায় দু ঘন্টা ধরে চলে বৈঠক। পরবর্তী সময় এয়ারপোর্ট অথরিটি লিখিতভাবে অভিযোগ জানায় নেতাজি সুভাষ চন্দ্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থানায়। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে কোন নাম্বার থেকে ফোনটি এসেছিল। কেন এই ধরনের ফোন করা হয়েছিল সমস্ত বিষয় তদন্তে নেমেছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থানা।
এই ঘটনার পর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আরও কড়াকড়ি আনার কথা ভাবছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে এবং নিরাপত্তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এই ধরনের বোমাতঙ্কের খবরে ভারতীয় উড়ান সংস্থাগুলির রীতিমতো নাজেহাল দশা। এর জেরে চলতি বছরের শুধুমাত্র অক্টোবরেই অন্তত ২০টি বিমানের পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। সব ক্ষেত্রেই ভুয়া হুমকি পেয়েছে সংশ্লিষ্ট বিমানবন্দর বা উড়ান সংস্থা। তবে এগুলিকে হালকা ভাবে নিতে নারাজ বেসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক।
যাত্রীবোঝাই বিমান উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি পেলে উড়ান সংস্থার কী কী করণীয়? কোন কোন পদক্ষেপ নিতে হবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে? ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা জারি করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের ডিরেক্টর জেনারেল। অন্য দিকে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলির যোগসূত্র খুঁজে পেতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
আপনার মতামত লিখুন :