সিরিয়া থেকে পালিয়ে পরিবারের সদস্যসহ রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদ। তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি মস্কোতে রয়েছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
গতকাল দিনভর বাশার আল-আসাদের অবস্থান নিয়ে ছিল নানান গুঞ্জন। নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল না তার গন্তব্য সম্পর্কে। রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস ও রিয়া নভস্তির বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাশার আল–আসাদ তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মস্কোয় পৌঁছেছেন। মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে রাশিয়া।
এর আগে সিরিয়ার বিদ্রোহী যোদ্ধাদের মাত্র ১২ দিনের অভিযানে রোববার বাশার সরকারের পতন ঘটে। এর মধ্য দিয়ে দেশটিতে তার দুই যুগের শাসনের অবসান ঘটে।
উল্লেখ্য, শক্তিশালী সামরিক নেতা হাফেজ আল-আসাদের পুত্র বাশার আল-আসাদ। উত্তরাধিকারসূত্রে পিতার কাছ থেকেই ক্ষমতা পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৭১ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিলেন আসাদের পিতা হাফেজ আল-আসাদ। পিতার মৃত্যুর পর ২০০০ সাল থেকে প্রায় দুই যুগ স্বৈরশাসক হিসেবে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় টিকে ছিলেন আসাদ।
উত্তারাধিকার সূত্রে ক্ষমতায় বসার এগারো বছর পর গণতন্ত্রের দাবিতে যখন সিরিয়ার সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে আসে তখন তাদের উপর প্রবল দমন-পীড়ন চালান আসাদ এবং তার বাহিনী। আসাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া কণ্ঠস্বরগুলোকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে কারাবন্দি করেছিলেন তিনি। তবুও গণতন্ত্রপন্থিদের আন্দোলন দমাতে পারেননি আসাদ। ক্রমান্বয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে মুক্তিকামী জনতার সংখ্যা বাড়তে থাকে। ফলে একসময় সিরিয়াতে গৃহযুদ্ধের সূচনা হয়। এর পরের বছরগুলোতে আসাদ বিদ্রোহীদের ওপর কঠিন থেকে কঠিনতর হতে থাকেন। এতে কয়েক হাজার সিরিয়াবাসী নিহত হন।
সেসময় বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন আসাদ। এছাড়া ওই আন্দোলনের মধ্যে নিজের হাতে কুক্ষিগত অঞ্চলগুলোতে নির্বাচন করেছিলেন সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট। তবে অগণতান্ত্রিক বলে ওই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছিলেন বিরোধীরা। গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে ক্ষমতা থেকে দূরে সরে যাওয়া সত্ত্বেও আসাদ তার রাজনৈতিক দল এবং তার সমর্থক আলাউইত পার্টির মাধ্যমে ক্ষমতাকে আঁকড়ে ধরে রাখতে প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :