ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘাতকে ‘ভয়াবহ’ বলে অভিহিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে তিনি এ সংঘর্ষ অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন এবং প্রয়োজনে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন। ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, “অবস্থা সত্যিই খুব ভয়াবহ। আমি উভয় দেশকে ভালোভাবে চিনি, উভয়ের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আমি চাই, তারা বিষয়টি মিটিয়ে নিক, আমি চাই তারা থামুক।”
ট্রাম্প আরও বলেন, “তারা পাল্টাপাল্টি হামলা চালাচ্ছে। অন্তত এখন তারা থামবে বলে আশা করছি।” তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সহায়তা দিতে ইচ্ছুক বলেও জানান।
এদিকে দক্ষিণ এশিয়ার এই উত্তেজনা নিরসনে কূটনৈতিকভাবে সক্রিয় হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিশালী রাষ্ট্র ইরান। ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি ইতিমধ্যে নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন। এর আগে তিনি ইসলামাবাদ সফর করেন এবং পাকিস্তান সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
ইরানি সংবাদমাধ্যমের বরাতে আল-জাজিরা জানিয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংকট নিরসনে তেহরান মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা রাখতে আগ্রহী। ইরান বলছে, তারা দুই দেশের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক বজায় রেখে শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজছে।
গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়, যা গত মঙ্গলবার গভীর রাতে ভারতের সীমান্তপার হামলার মাধ্যমে চরমে পৌঁছায়। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর দাবি, ওই হামলায় ৩১ জন নিহত এবং ৫৭ জন আহত হয়েছেন। অপরদিকে ভারতের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের পাল্টা গোলাবর্ষণে ১৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৪৩ জন আহত হয়েছেন, এ ছাড়া ভারতীয় এক সেনার প্রাণহানিও ঘটেছে।
পরিস্থিতি এতটাই অগ্নিগর্ভ যে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। ট্রাম্প বলেন, “আমার মনে হয়, অতীতের ইতিহাসের ভিত্তিতে মানুষ বুঝতে পেরেছিল যে কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। তারা (ভারত-পাকিস্তান) দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করছে।”
তিনি বলেন, “ওভাল অফিসের দরজা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় আমরা এ খবর শুনেছি। এটা হতাশার।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে এই ধরণের সংঘাত আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্যও বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই বিশ্বের বড় শক্তিগুলো এখন চাইছে দ্রুত কূটনৈতিক সমাধান।